![]() |
| কুরআন |
পবিত্র কুরআন মানবজাতির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বিরাট নেয়ামত। এটা মানবজাতির জন্য শাশ্বত জীবনবিধান। ১০৪ খানা আসমানি কিতাবের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হচ্ছে আল কুরআন। কুরআন একটি অত্যন্ত মর্যাদাবান গ্রন্থ, যা আল্লাহ তায়ালা শ্রেষ্ঠ মর্যাদাবান জাতির জন্য প্রেরণ করেছেন। এতে মানুষের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক উভয় প্রকার কল্যাণ রয়েছে।
যিনি কুরআনের আলোকে আলোকিত হবেন, আল্লাহ তাকে ইহকাল ও পরকালে উচ্চ মর্যাদা দান করবেন। কুরআনে রয়েছে বিশাল জ্ঞানের ভাণ্ডার। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেন- ‘করুণাময় আল্লাহ, যিনি কুরআন শিক্ষা দিয়েছেন, মানুষ সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে কথা বলা শিক্ষা দিয়েছেন।’ (সূরা আর রাহমান : ১-৪)।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, রমজান মাসই সেই মাস, যে মাসে কুরআন নাজিল করা হয়েছে, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্য পথযাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ, আর ন্যায়-অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য বিধানকারী (সূরা বাকারা : ১৮৫)। হজরত আনাস (রা:) থেকে বর্ণিত, নবী করিম সা: এরশাদ করেন, ‘প্রত্যেক মুসলিম নরনারীর ওপর ইলম শিক্ষা করা ফরজ’ (ইবনে মাজাহ)। প্রখ্যাত সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত রাসূল সা: এরশাদ করেন, ‘যার ভেতরে কুরআনের কিছুই নেই সে শূন্য ঘরের মতো’ (তিরমিজি)।
হজরত উমর (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূল সা: বলেন, ‘লোহায় পানি পড়লে যেমন মরিচা ধরে, তেমনি মানুষের অন্তরে মরিচা পড়ে।’ রাসূল সা:-কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘অন্তরের মরিচা দূর করার উপায় কী?’ তিনি বললেন, ‘বেশি বেশি করে মৃত্যুর কথা স্মরণ করা, আর কুরআন তিলাওয়াত করা (বায়হাকি)।’ নবী করিম সা: আরো বলেন, ‘এই কিতাবের মাধ্যমে আল্লাহ কোনো জাতিকে ওপরে ওঠান আবার কোনো জাতির অধ:পতন ঘটান।’ কুরআন এমন একটি কিতাব যা তিলাওয়াত করলে পুণ্য হয়।
কুরআন তিলাওয়াত অধিক ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। কুরআনের ফজিলত বর্ণনায় আল্লাহ তায়ালা রাসূল সা: কে কুরআন তিলাওয়াতের নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘কুরআন তিলাওয়াত করুন সুবিন্যস্তরূপে ও সুস্পষ্টভাবে’ (মুজাম্মিল-৪)। এরশাদ হচ্ছে : ‘আমি কুরআনে এমন বিষয় নাজিল করেছি যা মুমিনদের জন্য সুচিকিৎসা ও রহমতস্বরূপ’ (বনি ইসরাইল : ৮২)। কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত বর্ণনা প্রসঙ্গে রাসূল সা: বলেনÑ ‘তোমরা যারা সর্বদা কুরআন তিলাওয়াত করো কিয়ামতের দিন কুরআন তার জন্য আল্লাহর দরবারে সুপারিশ করবে’ (মুসলিম)।
উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা (রা:) থেকে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি শুদ্ধ উচ্চারণে কুরআন তিলাওয়াত করে, সে আখিরাতে আল্লাহর অনুগত ফেরেশতাদের সাথে থাকবে। আর যে কষ্ট করে বারবার উচ্চারণ করে তিলাওয়াত করে তার জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সওয়াব’ (বুখারি-মুসলিম)। সম্মানিত সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূল সা: বলেছেন, ‘দুইজন লোকের ব্যাপারে ঈর্ষা করা যাবে, তাদের একজন হলো যাকে আল্লাহ তায়ালা কুরআন পড়ার যোগ্যতা দিয়েছেন, আর সে দিন ও রাতের বিভিন্ন প্রহরে তাতে মশগুল থাকে। আর দ্বিতীয়জন হলো, আল্লাহ যাকে সম্পদ দিয়েছেন আর তা থেকে সে আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে’ (বুখারি ও মুসলিম)।
উল্লিখিত আলোচনান্তে আমরা কুরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত উপলব্ধি করতে পারি। তাই আসুন, আমরা সহি শুদ্ধভাবে নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত করে অধিক সওয়াব অর্জন করি। অর্থ জেনে পড়লে আরো অধিক সওয়াব। সে জন্য অর্থ জানার জোর চেষ্টাও চালানো জরুরি। কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে কুরআনের সমাজ কায়েম করি।



0 comments:
Post a Comment