ঘুরে আসুন পুণ্যভূমি সিলেট

সুদৃশ্য পাহাড় চুড়া, স্বচ্ছ জলরশি আর নানান রঙের নুড়ি পাথরের এক অপূর্ব সমন্বয় সিলেটের জাফলং।


ছামির মাহমুদ

মুগ্ধতাটা যে এমনই বারবার মনে হয়- সুন্দরেরও একটা সীমা থাকা উচিত! সিলেটে ভ্রমণে গেলে আপনারও এমনটা মনে হতে বাধ্য। নদী-পাথর-পাহাড় জলপ্রপাত আর চা-বাগানের কি অপূর্ব সমন্বয়। ওপারে ভারত আর এপারে বাংলাদেশের লালাখাল, লোভাছড়া-জাফলং কিংবা বিছনাকান্দি অথবা পাথুরে রাজ্য ভোলাগঞ্জ। এমন পর্যটন স্পট দেশের আর কোথাও পাবেন না।

তাই ছুটি পেলেই পরিবারের সবাই মিলে বেড়াতে পারেন আধ্যাত্মিক রাজধানী ও পর্যটননগর খ্যাত সিলেটে। আসন্ন ঈদের ছুটিতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘুরতে আসতে পারেন প্রকৃতির অনন্য দান সিলেটে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিলেট। এখানে বেড়ানোর জায়গার যেন শেষ নেই। উঁচু-নিচু পাহাড়ে ঘেরা সিলেটের ঢেউ খেলানো চা-বাগান নিমিষেই পর্যটকের মন কেড়ে নেয়।

দেখার মতো অনেক স্থাপনাও রয়েছে সিলেট নগরেই। তার মধ্যে অন্যতম- ক্বীন ব্রিজ, আলী আমজাদের ঘঁড়ি, চাঁদনি ঘাটের সিঁড়ি, হজরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহ পরান (রহ.) সহ ওলি আউলিয়াদের মাজার, খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান, আবঙ্গির পাহাড় (ইবনে বতুতার টিলা), শাহী ঈদগাহ, গৌর গোবিন্দের টিলা প্রভৃতি।

এছাড়া জাফলং, লালাখাল, শ্রীপুর, জৈন্তাপুর, রাতারগুল, জকিগঞ্জে তিন নদী সুরমা-কুশিয়ারা-বরাক মোহনা, জৈন্তিয়া রাজবাড়ী, বিছানাকান্দি ছাড়াও দেখার মতো অনেক কিছুই রয়েছে এখানে।

সিলেটের প্রকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা করে শেষ করা যায় না, এই সৌন্দর্য শুধুই উপভোগ করার। তাইতো এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সিলেটকে ‘শ্রীভূমি সিলেট’ নামে আখ্যায়িত করেছিলেন।

সবুজ সুনিবিড় সৌন্দর্য উপভোগ করতে অনেকেই ঈদের ছুটিতে ছুটে আসবেন সিলেটের অনিন্দ্য সুন্দর পর্যটন স্পটগুলোতে। জৈন্তিয়া পাহাড়ের অপরূপ দৃশ্য, জাফলংয়ের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য, রাতারগুলের জলারবন, পানতুমাইয়ের ঝরণাধারা, বিছনাকান্দির স্বচ্ছ জলের হাতছানি, লোভাছড়ার মন মাতানো সৌন্দর্য আর সারি সারি পাথরের স্তূপ পর্যটকদের টেনে আনে বার বার।
ওপরে বড় বড় ছায়া বৃক্ষ। নিচে আধো আলো আধো ছায়ায় দুটি পাতা একটি কুঁড়ির সবুজ চাদর। যেন শৈল্পিক কারুকাজ।

পর্যটকদের সুবিধার জন্য কয়েটি পর্যটন এলাকার পরিচয় ও ভ্রমণপথ তুলে ধরা হলো-

একমাত্র জলারবন রাতারগুল : 
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র জলারবন (সোয়াম্প ফরেস্ট) রাতারগুল। চারদিকে নদী ও হাওর বেষ্টিত এ বনের বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে রয়েছে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা হিজল-করচ গাছ। ৪ থেকে ফুট পানির মধ্যে ভাসা এই জলারবন দেখলে যে কারো ভালো লাগার কথা। ‘সিলেটের সুন্দরবন’ খ্যাত প্রায় ৩৩১ একর আয়তনের রাতারগুল বনে বর্ষাকালে পর্যটকদের ভিড় ব্যাপকভাবে লক্ষ করা যায়।

যেভাবে যাবেন : 
সিলেট থেকে রাতারগুলের দূরত্ব মাত্র ৩০ কিলোমিটার। শহর থেকে সরাসরি কোনো যানবাহন নেই। তবে শহর থেকে সিএনজি অটোরিকশা কিংবা মাইক্রোবাস নিয়ে যেতে পারেন সেখানে। ভাড়া পড়বে ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা। 

বিছানাকান্দি : 
ওপারে ভারত আর এপারে বাংলাদেশের বিছনাকান্দি। ভারত থেকে প্রবল বেগে শীতল জলস্রোত ধেয়ে আসছে বাংলাদেশের দিকে, মিশে যাচ্ছে বিছনাকান্দির রূপবতী নদীতে। স্রোতেরা বয়ে যাচ্ছে ছোট-বড় অসংখ্য পাথর পেরিয়ে। সেই পাথরে মাথা রেখে শীতল জলে গা ডুবিয়ে-ভাসিয়ে শুয়ে থাকছে মানুষ, ভাসিয়ে দিচ্ছে যাপিত জীবনের চিরায়ত ক্লান্তি- এটি বিছনাকান্দির এক নৈমিত্তিক দৃশ্য।

কোথা থেকে এই স্বচ্ছ শীতল জলের উৎপত্তি, তা দেখার উপায় নেই মোটেই। ওপাশেই যে ভারত, সীমারেখায় বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা ভিন্ন জনপদ! এপাশে বিজিবি’র সশস্ত্র আনাগোনা আর ওপাশে বিএসএফের সতর্ক চোখ। সীমানা পেরোলেই গর্জে উঠতে পারে রাইফেল! তাই অনেকটা স্বাধীন আর অনেকটা সীমাবদ্ধ অবস্থানে থেকে গিলে খেতে হয় বিছনাকান্দির অপার সৌন্দর্যকে। পাথুরে জলে নিজেকে সঁপে দেয়া আপনাকে দেবে এক ভিন্ন প্রশান্তি, নিয়ে যাবে এক অপার্থিব জগতে। মেঘলা দিনে বিছনাকান্দি গেলে দেখা পেতে পারেন পাহাড়ের গায়ে ভেসে থাকা মেঘমালা। 

সুন্দরের ছড়িয়ে থাকাটা অবশ্য বিছনাকান্দির পথে পথে। সড়কপথের দু’পাশে চা বাগান, নদী, অবারিত সবুজ মাঠ আর ছোটখাটো বনাঞ্চল দৃষ্টিকে দেবে অন্যরকম সুখ। সড়কপথ ফুরিয়ে যখন নৌকায় চাপবেন, তারপরই মনে হবে- ‘একি! ঘরের দুয়ারে এমন জায়গাও আছে!!’

সরু নদীর দুপাশে পাথরের সাম্রাজ্য আর সবুজের গালিচা পেছনে রেখে যতোই সামনে এগোবেন, ততোই আপনার চোখের সামনে উন্মুক্ত হতে থাকবে ওপারের বিশাল সব মেঘে ঢাকা পাহাড়, যেনো কোনো শিল্পীর আঁকা বিশাল ক্যানভাস কেউ বসিয়ে দিয়েছে যত্ন করে! এভাবেই মুগ্ধ বিস্ময়ের ঘোর না কাটতেই নৌকা আপনাকে নামিয়ে দেবে বিছনাকান্দিও শেষ অথচ কাঙ্ক্ষিত সেই সুন্দরের কেন্দ্রে। ইচ্ছে হলেই পাথুরে জল ভেঙ্গে ছুটে যেতে পারেন সে সুন্দরের দিকে আর নিজেকে ভাসিয়ে দিতে পারেন আপাদমস্তক, তবে ইচ্ছে হলেই ফিরতে পারবেন না হয়তো!

নৌকা করে হাদারপাড় থেকে বিছনাকান্দি যেতে পড়বে এমন সুন্দর খাল যাদের এখনো দুই পা ফেলে দেখা হয়নি মায়াময় বিছনাকান্দি, তারা এই না ফেরার ঝুঁকিটা নিয়েই ফেলুন! 

যেভাবে যাবেন : 
সিলেট থেকে বিমানবন্দর সড়ক ধরে তারপর সালুটিকর মোড় ঘুড়ে সব মিলিয়ে দেড় ঘণ্টার পথ পাড়ি দিলেই বিছানকান্দি চলে যাওয়া য়ায়। সালুটিকর থেকে সরু সড়কপথে প্রায় বিশ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে হাদারপাড়া বাজাওে থেমে যায় গাড়ি। বাকিপথ হেঁটে অথবা নৌকায় যেতে হয়। এই পথ মাত্র দুই কিলোমিটার। এর পরেই পাথুরে পথ মারিয়ে যেতে হয় বিছানাকান্দি। ভাড়া সিএনজি অটোরিকশায় চারশ’ থেকে সাতশ’ টাকা। 

জাফলং : 
সুদৃশ্য পাহাড় চুড়া, স্বচ্ছ জলরশি আর নানান রঙের নুড়ি পাথরের এক অপূর্ব সমন্বয় সিলেটের জাফলং। নগর সভ্যতার যান্ত্রিক কোলাহল ছেড়ে জীবন এখানে এসে মাথা লুকোয় একটু শান্তির খোঁজে। প্রকৃতির মায়াবী পরশে আনন্দে নেচে ওঠে মন। তাই ঈদের ছুটিকে পরিপূর্ণ করে তুলতে যে কেউ আসতে পারেন পাহাড়, পানি ও পাথরভরা রূপকথার রাজ্য জাফলংয়ে।

প্রকৃতি কন্যা হিসেবে সারা দেশে এক নামে পরিচিত সিলেটের জাফলং। খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জাফলং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি। পিয়াইন নদীর তীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তুপ জাফলংকে করেছে আকর্ষণীয়।

সীমান্তের ওপারে ভারতীয় পাহাড়-টিলা, ডাউকি পাহাড় থেকে অবিরাম ধারায় প্রবহমান জলপ্রপাত, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ, পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ হিমেল পানি, উঁচু পাহাড়ের গহীন অরণ্য ও প্রকৃতির শুনশান নীরবতা পর্যটকদের দারুণভাবে মোহাবিষ্ট করে। তাই যান্ত্রিক সভ্যতার সকল ব্যস্ততা ভুলে গিয়ে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও প্রকৃতির কাছে নিজেকে সঁপে দিতে প্রতিদিনই দেশি-বিদেশি হাজারো পর্যটক ছুটে আসেন প্রকৃতিকন্যা জাফলংয়ে।

প্রকৃতি কন্যা ছাড়াও বিউটি স্পট, পিকনিক স্পট, সৌন্দর্যের রানিসহ বাহারী নামে পর্যটকদের কাছে পরিচিত জাফলং। ভ্রমণ পিয়াসীদের কাছে জাফলংয়ের আকর্ষণ যেন সম্পূর্ণ আলাদা। তাই সিলেট ভ্রমণে আসলে জাফলং না গেলে ভ্রমণই যেন অপূর্ণ থেকে যায়। 

যেভাবে যাবেন : 
সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল (কদমতলি) থেকে বাস/মাইক্রোবাস/অথবা ধোপাদিঘীরপাড় ওসমানী শিশু উদ্যানের সামনে থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশা/হিউম্যান হলারে (লেগুনা) যেতে পারেন জাফলং। সময় লাগবে দেড় থেকে ২ ঘণ্টা। ভাড়া ৬০ টাকা। মাইক্রোবাস-২ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা। সিএনজি অটোরিকশা ১০০০ টাকা। 

যেখানে থাকবেন : 
জাফলংয়ে থাকার তেমন সুব্যবস্থা নেই। উল্লেখ করার মধ্যে রয়েছে নলজুরী এলাকায় জেলা পরিষদের সরকারি রেস্ট হাউস (পূর্ব অনুমতি নিতে হবে), শ্রীপুর পিকনিক স্পট, শ্রীপুর বাংলো। এছাড়া জাফলংয়ে থাকার জন্য ব্যক্তি মালিকানাধীন সাধারণ মানের স্থানীয় কয়েকটি হোটেল রয়েছে। তবে সিলেট শহরে এসে থাকা যাবে ভালোমানের হোটেলে।

লালাখাল : 
জাফলং যাওয়ার পথে জৈন্তাপুর উপজেলার সারিঘাটের কাছেই অবস্থিত লালাখাল। নির্জন মনকাড়া লালাখালের স্বচ্ছ নীল জলরাশি আর দুই ধারের অপরূপ সৌন্দর্য, দীর্ঘ নৌ-পথ ভ্রমণের সাধ যেকোনো পর্যটকের কাছে এক দুলর্ভ আকর্ষণ। 

ভারতের চেরাপুঞ্জির ঠিক নিচে লালাখালের অবস্থান। চেরাপুঞ্জি থেকে এ নদী বাংলাদেশে প্রবাহিত। এবার ঈদে লালাখালে ভিড় থাকবে পর্যটকের। 

যেভাবে যাবেন : 
সিলেট শহর থেকে লালাখালের দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার। অনেক ভাবেই যাওয়া যায়। শহর থেকে বাস, টেম্পু মাইক্রোযোগে পৌঁছা যায়। এছাড়া সারিঘাট থেকে ভারতের  চেরাপুঞ্জি পাহাড় থেকে উৎপন্ন হওয়া সারি নদীর স্বচ্ছ নীল  জলরাশির উপর দিয়ে নৌকা অথবা স্পিডবোটে করেও যেতে পারেন লালাখাল।

পানতুমাই : 
বাংলাদেশের কোল ঘেঁষে প্রতিবেশী ভারতের মেঘালয়ের গহীন অরণ্যের কোলে বাংলাদেশ পানে নেমেছে অপরূপ এক ঝরণাধারা। সুউচ্চ পাহাড় থেকে নেমে আসছে জলরাশি। সফেদ জলধারা লেপ্টে আছে সবুজ পাহাড়ের গায়ে। দেখলে মনে হবে সবুজের বুকে কেউ হয়তো বিছিয়ে রেখেছে সাদা শাড়ি। 
ভারতের মেঘালয় পাহাড় থেকে নেমে আসা এই ঝরণাধারাটি স্থানীয়ভাবে মায়ামতি ও ফাটাছড়া ঝরণা হিসেবে পরিচিত। আর পর্যটকদের কাছে জলপ্রপাতটির পরিচিতি ‘পাংথুমাই ঝরনা’ নামে। 

যেভাবে যাবেন : 
সিলেট শহর থেকে পাংথুমাইয়ের দূরত্ব প্রায় ৪৫ কিলোমিটার। সিলেট শহর থেকে মাইক্রোবাস বা সিএনজি অটোরিকশা যোগে যাওয়া যাবে পাংথুমাইয়ে। শহরের আম্বরখানা থেকে অটোরিকশা নিয়ে সরাসরি যাওয়া যাবে পাংথুমাই। 

এছাড়া নগরীর যে কোনো স্ট্যান্ড থেকে মাইক্রোবাস নিয়েও যাওয়া যাবে পাংথুমাইয়ে।  নগরীর আম্বরখানা থেকে সালুটিকর বাজার, সালুটিকর বাজার থেকে গোয়াইনঘাট সড়ক দিয়ে গোয়াইনঘাট ডিগ্রি কলেজের পূর্বপাশের আহারকান্দি রাস্তা দিয়ে সোজা যাওয়া যাবে পাংথুমাই।

লোভাছড়া : 
সীমান্তের বড় বড় পাহাড় ছুঁয়ে নেমেছে ঝরণা। চারদিকে সবুজ বেষ্টিত চা বাগান, সারি সারি গাছ, পাহাড় আর বালু সমৃদ্ধ স্বচ্ছ পানির বহমান নদী। অনেকটা লোকচক্ষুর আড়ালে প্রাকৃতিক নৈসর্গের আরেক রূপ। নাম ‘লোভাছড়া’। সিলেটের সীমান্তবর্তী কানাইঘাট উপজেলায় অবস্থিত মনোমুগ্ধকর অপূর্ব এই সৃষ্টি। প্রকৃতি যেখানে তার সৌন্দর্যের মোহ ছড়ায়! রাঙ্গামাটির মতোই একটি ঝুলন্ত ব্রিজ রয়েছে এই লোভাছড়ায়। ব্রিজটি নির্মিত হয় ১৯২৫ সালের এপ্রিল মাসে। 

যেভাবে যাবেন :  
দেশের যেকোনে জায়গা থেকেই সিলেট এসে বাসে করে ৬০ টাকা দিয়ে যাওয়া যাবে কানাইঘাট। অথবা সিলেট থেকে সিএনজি রিজার্ভ করেও যাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে ভাড়া নেবে ছয়শ’ টাকার মতো। কানাইঘাট থেকে নৌকা করে লোভাছড়ায় যেতে জনপ্রতি ভাড়া নেবে ৩০-৪০ টাকা করে।

মালনীছড়া চা বাগান : 
ওপরে বড় বড় ছায়া বৃক্ষ। নিচে আধো আলো আধো ছায়ায় দুটি পাতা একটি কুঁড়ির সবুজ চাদর। যেন শৈল্পিক কারুকাজ। সিলেটের চা-বাগানের এ প্রাকৃতিক দৃশ্য পর্যটকের মন ছুঁয়ে যায়।
১৫০০ একর জায়গার ওপর অবস্থিত উপমহাদেশের প্রথম চা বাগান মালনীছড়ায় পর্যটকদের কাছে আরেক বিস্ময়। সিলেটের চায়ের রঙ, স্বাদ এবং সুবাস অতুলনীয়। বর্তমানে বেসরকারি তত্ত্বাবধানে চা বাগান পরিচালিত হয়ে আসছে। 

চা বাগানের পাশাপাশি বর্তমানে এখানে কমলা ও রাবারের চাষ করা হয়। এই বাগানের পাশেই বিশ্বের অন্যতম সুন্দর স্টেডিয়াম। যেখানে ২০১৪ সালের বিশ্ব টি-২০ খেলা অনুষ্ঠিত হয়।

মালনীছড়া চা বাগান ছাড়াও সিলেটে লাক্কাতুরা চা বাগান, আলী বাহার চা বাগান, খাদিম আহমদ টি স্টেট, লালাখান টি স্টেট, বরজান টি স্টেট উল্লেখযোগ্য। 

যেভাবে যাবেন : 
মালনীছড়া এবং লাক্ষতুরা চা বাগান দুটোই সিলেট শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত। শহরের কেন্দ্রস্থল জিন্দাবাজার পয়েন্ট থেকে যে কোনো গাড়ি দিয়ে মাত্র ১৫ মিনিটে যাওয়া যায় চা বাগান দু’টিতে।


ঐহিত্য আর পবিত্র স্থানসমূহ : 
এছাড়াও সিলেটের শাহজালাল (র.) এবং শাহপরান (র.) এর মাজার এবং নাজিমগড় রিসোর্ট, জাকারিয়া সিটি, সিলেট নগরীর শেখ ঘাটে ঐতিহ্যবাহী জিতু মিয়ার বাড়ি, ঐতিহ্যবাহী ক্বিন ব্রিজ, টিলাগড়ে অবস্থিত এমসি কলেজসহ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রও ঘুরে দেখতে পারেন। তাই ঈদের ছুটিতে এবার না হয় চলুন সিলেটে।
Share on Google Plus

About news zone

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment