অনেক পুরুষেরও কেন বড় স্তন হয়?



এখন সিক্স প্যাক অ্যাব, চওড়া ছাতি, পুরুষালি চেহারার জন্য মাননসই স্তন পেতে চিকিৎসকের ছুড়ির তলায় আসতে পিছপা হচ্ছে না তরুণ প্রজন্ম। অথচ ১০ বছর আগেও পুরুষ স্তন নিয়ে সে হারে মাথাব্যাথা ছিল না তরুণদের মধ্যে।

পুরুষদের ক্ষেত্রে স্তন পরিবর্ধনের ঘটনা মূলত ঘটে পুরুষ ও নারী হরমোনের অসামঞ্জস্যের জন্য। অ্যান্ড্রোজেন হল পুরুষ হরমোন এবং ওয়েস্ট্রোজেন বল হল নারী হরমোন। ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সের ছেলেদের মধ্যে এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি হয়। যদিও মধ্যবয়সে গিয়ে যে এই সমস্যা একেবারেই হয় না তা নয়।

সাধারণভাবে মানুষের মধ্যে ভুল ধারণা থাকে পুরুষদের শরীরে পুরুষ হরমোন ও মেয়েদের শরীরে নারী হরমোন থাকে। কিন্তু তা সম্পূর্ণ ভুল। দুই হরমোনই পুরুষ ও নারীর উভয়ের শরীরে থাকে। তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে অ্যান্ড্রোজেনের প্রভাব বেশি থাকে, আর মেয়েদের শরীরে ওয়েস্ট্রোজেনের। কিন্তু যদি কোনও পুরুষের শরীরে যদি স্বাভাবিকভাবে ওয়েস্ট্রোজেন হরমোনের গ্রহণক্ষমতা বেশি হয়, তাহলে স্থূল স্তনের সমস্যা হতে পারে। তবে এমন রোগীর সংখ্যা খুব কম। মূলত অপুষ্টি, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা এবং স্টেরয়েডের ফলে এই ধরনের সমস্যা বেশি হয়।

পুরুষের স্তন থাকার কারণ হতে পারে গোইনোকোম্যাস্টিয়াও। মূলত পুরুষের ছাতি হবে শক্ত, পেটানো। কিন্তু কোনো কোনো পুরুষের স্তনবৃন্তের ঠিক নীচে শক্ত টিস্যু তৈরি হয়। ১ থেকে ২ ইঞ্চ লম্বা হয় সেই টিস্যু। দু’টি বৃন্তের নীচেই গজিয়ে ওঠে তা। ফলে শক্ত ও টাইট হওয়ার পরিবর্তে নরম হয়ে ওঠে বুক, ঝুলে আসে সামনের দিকে। দেখে মনে হয় নারীর মতোই দু’টি স্তন। চিকিৎসা বিজ্ঞানে যাকে বলা হয় গাইনোকোম্যাস্টিয়া।

এর কারণ :
• বয়ঃসন্ধির সময় হরমোনের ভারসাম্য হারালে পুরুষের স্তনবৃন্তের নীচে টিস্যু তৈরি হতে পারে।
• নিষিদ্ধ ড্রাগ, ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ খেলেও হতে পারে এই সমস্যা।
• গোইনোকোম্যাস্টিয়া কোনো রোগ নয়। এটি অন্য রোগের উপসর্গ মাত্র।
• নারী শরীরে ওয়েস্ট্রোজেন হরমোন বাড়লে স্তনের বৃদ্ধি ঘটে। পুরুষ শরীরে স্তন বাড়তে পারে অ্যান্ড্রোজেন হরমোন বেশি নিঃসরিত হলে।
গাইনোকোম্যাস্টিয়ার চিকিৎসা :
• তিন বছরের মধ্যে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তার জন্য প্রতি মাসে চিকিৎসকের কাছে স্তনের আকার মাপিয়ে নিতে হবে। সেই সঙ্গে পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।
• গাইনোকোম্যাস্টিয়া রোধ করতে নিষিদ্ধ ড্রাগ খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
• স্তনের আকার ছোটো করতে ওষুধও খেতে দেন চিকিৎসকরা। তাতে বৃন্তের নীচে গজিয়ে ওঠা টিস্যু নির্মূল হয়ে যায়।
• অস্ত্রোপচার করানোর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
• যে রোগের উপসর্গ হিসেবে গাইনোকোম্যাস্টিয়ার আবির্ভাব, সেটি চলে যেতে পারে সেই রোগটি সারলেও।
Share on Google Plus

About news zone

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment